সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)

যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো…।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।শিগগির আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)
দ্বিন প্রচারের দায়িত্ব পালনকারী মুমিনদের সর্বোত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে কথায় কে উত্তম—যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদের একজন।’
(সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৩)
নগরবার্তা/এম মিল্লাত