ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের জয়ে ভারতীয় কংগ্রেস নেতার উদ্বেগ

গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমর্থিত ইউনাইটেড স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ভূমিধস বিজয় অর্জন করেছে। এই নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম সহ-সভাপতি (ভিপি), এস এম ফরহাদ সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং মহিউদ্দিন খান সহ সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিগত ৪৮ বছরের ইতিহাসে ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এত প্রকাশ্যে ও জোরালো প্রচারণা চালাতে পারেনি। এই নির্বাচনে কমপক্ষে ১০টি প্যানেল অংশ নিলেও ছাত্রশিবির প্রায় সম্পূর্ণ আধিপত্য নিয়ে জয়লাভ করেছে।

ছাত্রশিবিরের এই ঐতিহাসিক জয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের সাংসদ ও প্রভাবশালী নেতা শশী থারুর। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক মাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে তিনি এই উদ্বেগ জানান।

শশী থারুর তার পোস্টে লিখেছেন, “ভারতের বেশিরভাগ মানুষের কাছে এটি (ছাত্রশিবিরের জয়) হয়তো খুব সামান্য একটি ঘটনা হিসেবে মনে হতে পারে। কিন্তু এটি আসন্ন দিনগুলোর জন্য একটি উদ্বেগজনক ইঙ্গিত।”
থারুর উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল – (বর্তমানে নিষিদ্ধ) আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) – উভয়ের প্রতিই জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ রয়েছে। তার মতে, যারা এই দুটি দলের ওপর বিরক্ত তারা ক্রমশ জামায়াতে ইসলামীর দিকে ঝুঁকছেন।

কংগ্রেস নেতা আরও ব্যাখ্যা করেন যে ভোটাররা জামায়াতের দিকে ঝুঁকছেন এই কারণে নয় যে তারা ধর্মান্ধ বা কট্টরপন্থী ইসলামে বিশ্বাসী। বরং জামায়াতে ইসলামী এমন কোনো দুর্নীতি বা অব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত নয়, যা অন্য দুটি মূলধারার দলের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
শশী থারুর প্রশ্নের সুরে বলেছেন, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে এর কী প্রভাব পড়বে? নয়াদিল্লিকে কি তাহলে প্রতিবেশী দেশে জামায়াতের সংখ্যাগরিষ্ঠতার (সরকারের) মোকাবিলা করতে হবে?”

উল্লেখ্য যে, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের পতনের পর বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতিতে এটি প্রথম বড় নির্বাচন। এই নির্বাচনে ৭৮.৩৩% ভোটার উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছে। নির্বাচনে ১৮টি হল থেকে ছাত্ররা ৮টি ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।
এই নির্বাচনের ফলাফল দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *