শ্রীলঙ্কার কাছে বড় হার বাংলাদেশের

এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের দেয়া ১৪০ রানের লক্ষ্য ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার ফিফটি ও তিনে নামা কামিল মিশারার অপরাজিত ইনিংসে ভর করে মাত্র ১৪.৪ ওভারেই পেরিয়ে গেছে লঙ্কানরা। এই হারে সুপার ফোরে খেলার পথ কঠিন করে তুললো লিটন দাসের দল।

এবারের আসরে বি গ্রুপে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। সুপার ফোর উঠতে তাই নেট রান রেটটা রাখতে পারে বড় ভূমিকা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩২ বল হাতে রেখে হারিয়ে সেই রান রেট বাড়িয়ে রাখল শ্রীলঙ্কা (+২.৫৯৫)। হংকংকে হারিয়ে ‍+৪.৭০০ নেট রান রেট নিয়ে শীর্ষে আফগানিস্তান। ২ ম্যাচে ২ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশের নেট রান রেট –০.৬৫০।

আগামী সোমবার হংকংয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জিতলে মঙ্গলবারের আফগানিস্তান ম্যাচটি নকআউট হয়ে যাবে বাংলাদেশের জন্য। সে ম্যাচ হারলেই সুপার ফোরের আগেই দেশে ফিরতে হবে বাংলাদেশকে। আর জিতলেও অবশ্য শ্রীলঙ্কা–আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।

তাই লঙ্কানদের কাছে এমন হারের নেট রান রেটকে যাচ্ছেতাই বানিয়ে পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোও কঠিনই হওয়ার কথা বাংলাদেশের। তবে এখনই আশা ছাড়তে নারাজ টাইগার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকের আলী অনিক। ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে এসেছি, এক ম্যাচ হেরেই আশা বাদ দেওয়া যাবে না’

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য এখন ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। সেই ম্যাচ নিয়ে জাকের বলেন, ‘আশা ছাড়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা ম্যাচ জেতার জন্য খেলব। এই ম্যাচেও আমরা জেতার মানসিকতা নিয়ে এসেছিলাম, হয়নি। পরের ম্যাচেও জেতার মানসিকতা নিয়েই যাব। এ ছাড়া তো আর উপায় নেই।’

এরপর তিনি টুর্নামেন্টে নিজেদের সম্ভাবনা নিয়ে বলেছেন, ‘আমরা তো টুর্নামেন্টে শুধু ম্যাচ খেলতে আসিনি, আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এসেছি। এক ম্যাচ হেরে আশা বাদ দেওয়া যাবে না।’

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ইনিংস শুরু হয়েছিল দুঃস্বপ্ন দিয়ে। প্রথম দুই ওভারে কোনো রান তুলতে পারেনি দল, হারিয়েছে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমনকে। এরপর আবার পঞ্চম ওভারে রানআউটে কাটা পড়েন তাওহিদ হৃদয় (৮)। ৩৮ রানে শেখ মেহেদী হাসান (৯) ফিরলে আরও বিপদে পড়ে দল।

অধিনায়ক লিটন দাস কিছুটা আশা জাগালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করে আউট হলে ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে ষষ্ঠ উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়ে দলকে লড়াইয়ে ফেরান শামীম হোসেন ও জাকের আলী। দুজন মিলে অবিচ্ছিন্ন ৮৬ রান তোলেন। তাতে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ থামে ১৩৯/৫-এ।

শামীম ৩৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ এবং জাকের ৩৪ বলে ২ চারে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা নিয়েছেন ২ উইকেট। নুয়ান তুষারা ও দুশমন্থ চামিরা দুজনেই ৪ ওভারে ১৭ রানের বিনিময়ে ১টি করে উইকেট শিকার করেন।

জবাবে শ্রীলঙ্কা শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করে। যদিও কুশল মেন্ডিস দ্রুত ফেরেন, তবে পাথুম নিসাঙ্কা ও কামিল মিশারার ৯৫ রানের জুটিতে জয়টা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। মিশারা করেন ৩৪ বলে ৪৪ রান। নিশাঙ্কা ৩৪ বলে ফিফটি করে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে আউট হন।

শেষ দিকে কুশল পেরেরা ও দাসুন শানাকা দ্রুত বিদায় নিলেও জয় পেতে আর সমস্যা হয়নি লঙ্কানদের। ১৪ ওভার শেষে চার উইকেট হারিয়ে সহজেই জয় নিশ্চিত করে তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৯/৫ (শামীম পাটওয়ারী ৪২, জাকের আলি ৪১, লিটন দাস ২৮; ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ২/২৫, নুয়ান তুষারা ১/১৭, দুশমন্থ চামিরা ১/১৭)।


শ্রীলঙ্কা: ১৪.৪ ওভারে ১৪০/৪ ( পাথুমনিশাঙ্কা ৫০, কামিল মিশারা ৪৬*; শেখ মাহেদী হাসান ২/২৯, তানজিম হাসান সাকিব ১/২৩, মুস্তাফিজুর রহমান ১/৩৫)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কামিল মিশারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *