সুন্দরগঞ্জেও সবজির দামে আগুন, বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পৌর: বাজারে বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে সরাসরি প্রভাবিত করছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের সবজির দামই চড়া। এমন আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, যেখানে বিক্রেতারা এর কারণ হিসেবে পাইকারি বাজারে দাম বেশি থাকাকে দায়ী করছেন।

চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি: সুন্দরগঞ্জ পৌর: বাজারের বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী, বিভিন্ন সবজির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বর্তমানে পটল প্রতি কেজি ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা এবং কাকরোল প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও লাউ প্রতি পিস ৫০ টাকা এবং পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দাম বৃদ্ধি হঠাৎ হওয়ায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দৈনন্দিন বাজার করতে হিমশিম খাচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি দামে কাঁচামরিচ, বিক্রেতা সোহান মিয়া জানান সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ, যার প্রতি কেজির দাম ১৮০ টাকা। এর আকাশছোঁয়া দামের কারণ জানতে চাইলে কয়েকজন বিক্রেতা জানান, বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মরিচের গাছে এক ধরনের মড়ক লাগে, যার ফলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যায়। এছাড়া, ফলন কম হওয়ায় বাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান কম। বর্তমানে কিছু কাঁচামরিচ ভারত থেকেও আমদানি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।

ক্রেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানা যায়, সবজির এমন ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। একজন ক্রেতা জানান, “আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের সীমিত আয়ে এমন দাম দিয়ে বাজার করা অসম্ভব। হঠাৎ করে সবজির দাম এত বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বাজেট ভেঙে পড়েছে।” তবে স্বস্তির বিষয় হলো, আলুর দাম এখনো সাধারণের নাগালে রয়েছে, যা প্রতি কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই কারণে ক্রেতারা কিছুটা হলেও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

পাইকারি বাজারকে দোষারোপ করছেন খুচরা বিক্রেতারা, কেন এমন দাম বৃদ্ধি, তা জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন যে পাইকারি বাজারেই দাম বেশি। এক বিক্রেতা বলেন, “আমরা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনলে, খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই। আমাদের তেমন লাভ থাকে না।” তাদের মতে, এই দাম নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি পাইকারি বাজারের উপর নির্ভর করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরবরাহ চেইন ব্যবস্থাপনার ত্রুটি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎপাদন হ্রাসের ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *