রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারের বিয়ারিং প্যাড খসে পড়ে প্রাণ হারানো আবুল কালামের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়েছে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের পরিবেশ। মর্গের সামনে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন কালামের স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া (৩৬)। ফ্যাল ফ্যাল করে তার দিকে তাকিয়ে থাকছে ছেলে। এই করুণ দৃশ্যের আহাজারির মধ্যেই নেটিজেনদের মধ্যে শোকের আবহ তৈরি করেছে কালামের সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাস।
শনিবার (২৫ আগস্ট) সি এম আজাদ আবুল কালাম তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, ’ইচ্ছা তো অনেক, আপাতত যদি জীবন থেকে পালিয়ে যেতে পারতাম’।
তার মৃত্যুর পর এই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ভেসে বেড়াচ্ছে নেটদুনিয়ায়। অনেকেরই প্রশ্ন, তবে কী মৃত্যুর কথা আগেই টের পেয়েছিলেন কালাম? হঠাৎ কেনই বা এমন স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি?
রবিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আবুল কালামের মৃত্যু হয়। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি এলাকার জলিল চোকদারের ছেলে।
নিহতের ভাগ্নে শাহাদাত মর্গের সামনে বলেন, নিহত আবুল কালাম ট্রাভেল এজেন্টে এয়ার টিকেট বিক্রির কাজ করতেন। তার তিন ও চার বছর বয়সী দুটো ছেলে রয়েছে; পরিবার নিয়ে থাকতেন নারায়ণগঞ্জে।
তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন বলেন, ফার্মগেট মেট্রো স্টেশনের নিচে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনের ফুটপাত দিয়ে আবুল কালাম হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় উপর থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
কম্পন প্রতিরোধের জন্য সেতু বা উড়াল সেতুতে ইলাস্টোমোরিক বিয়ারিং প্যাড বসানো থাকে। এ প্যাড নিওপ্রেন বা প্রাকৃতিক রাবার দিয়ে তৈরি, যা পিয়ার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো হয়। কোনোটির ভেতরে কয়েক পরতে থাকে স্টিলের কাঠামো, আর উপরে থাকে রাবার। এগুলো ওজনে অনেক ভারী হয়।
