সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শিশির মনির জানায়, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা আছে। এখন তো কোনো সংসদ নেই, সেটি ভেঙে গেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এ ছাড়া আরও কিছু সাংবিধানিক জটিলতা রয়েছে। তাই সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন নির্বাচনে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।এর আগে সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি শেষ করেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। শুনানি শুরু হয় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানোর আপিলের তৃতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালতে ইন্টারভেনর হিসেবে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।
২২ অক্টোবর শুনানির দ্বিতীয় দিন ড. শরীফ ভূঁইয়া রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আর ২১ অক্টোবর শুরু হয় এই বিষয়ে আপিলের প্রথম দিনের শুনানি।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ।
পরে ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি আপিল করেন।
প্রসঙ্গত, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে এই সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর ধারাবাহিকতায় সরকার ২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে, যা ৩ জুলাই গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পরিবর্তনের পর পুনরায় রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন বদিউল আলম মজুমদার, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন।
