জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে জকসুর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ বিধিমালা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত আচরণবিধিতে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিধিমালার ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কমিশন প্রত্যেক প্রার্থীর ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্তির বিষয়টি পরীক্ষা করবেন এবং মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে উক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। কেউ ডোপ টেস্টে অনুপস্থিত থাকলে তার মনোনয়নপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।
ডোপ টেস্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় উল্লেখ করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সামী মাহমুদ বলেন, ডোপ টেস্টের সিদ্ধান্ত অবশ্যই প্রশংসনীয়। নেতৃত্ব যাদের হাতে থাকবে তারা মাদকমুক্ত কিনা তা যাচাই করা জরুরি। এতে ক্যাম্পাস মাদকমুক্ত হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।
আরেক শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান পারভেজ বলেন, আমরা চাই না, কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হন। তাই এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী।
শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান প্রামাণিক বলেন, ডোপ টেস্ট শিক্ষাঙ্গনের রাজনীতিতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। এটি নৈতিক ও আদর্শ নেতৃত্ব গঠনে সহায়তা করবে এবং রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা ঘটাবে।
জকসুতে পদপ্রার্থী ও আবৃত্তি সংসদের সভাপতি আতিফ মেজবাহ লগ্ন বলেন, ডোপ টেস্টের সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক মনে হয়েছে। তবে, এই পরীক্ষার ফলাফলে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা জরুরি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের গে ডোপটেস্টের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। যথাযোগ্য তৎপরতা নেয়া দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, আমরা এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই আমাদের জকসুর প্রার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ, দায়িত্বশীল বোধ সম্পন্ন হোক। এতে ছাত্র সমাজে একটি ইতিবাচক ও নৈতিক নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। প্রার্থী নির্ধারণে মাদকাসক্তি পরীক্ষা চালু করলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদকবিরোধী মানসিকতা ও সচেতনতা তৈরি হবে। তারা বুঝবে যে মাদক গ্রহণ শুধু শরীরের ক্ষতি নয়, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও সুযোগ হারানোর কারণও হতে পারে।
শাখা ছাত্র দলের আহ্বায়ক সদস্য আবু বকর খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জকসু প্রার্থীদের যে ডোপ টেস্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমি চাই জকসু নির্বাচনে সুস্থ, স্বাভাবিক ও পরিষ্কার মস্তিষ্কের ব্যক্তি আসুক। কোনো মাদকাসক্ত নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি না আসুক।
এসব বিষয়ে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, রোববার আমাদের একটা মিটিং আছে। আমাদের নির্বাচন হবে পরিচ্ছন্ন। ডোপ টেস্টের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। আমরা নির্বাচনের কোনো ডেট এখনো নির্ধারণ করিনি। সার্বিক বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে আমরা সিদ্ধান্তগুলো নিবো। শিক্ষার্থীদের একটি সুন্দর জকসু উপহার দিতে চাই।
