২৬ দিন পিছিয়ে ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন
জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর তফসিল ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী আগামী ২২ ডিসেম্বর (সোমবার) অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা পৌনে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে এ তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান। এসময় জকসুর অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।
তবে ঘোষিত তারিখ পুনর্বিবেচনা করে নির্বাচন এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার, ছাত্রশক্তি ও আপ বাংলাদেশ। তাদের দাবি, ২২ ডিসেম্বরে বিশ্বিবদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে যাবে। তাই ঘোষিত তারিখে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না বলে দাবি করেন তারা।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৬ নভেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ৯ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর ভোটার তালিকা আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ১২ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ১৩, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর মনোনয়ন পত্র বিতরণ, ১৭ ও ১৮ নভেম্বর মনোনয়ন পত্র দাখিল, ১৯ ও ২০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ২৪, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করা হবে।
এছাড়া ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে ও ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর ৪ ডিসেম্বর, ৭ ডিসেম্বর ও ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এদিকে প্রত্যাহারকৃত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে ৯ ডিসেম্বর। এরপর ৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণা করবেন আর ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ হবে। এছাড়া তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের দিনেই ভোট গণনা ও ২২ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা হবে।
শিবির, ছাত্র অধিকার, ছাত্রশক্তি ও আপ বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া :
বুধবার তফশিল ঘোশণার পর আলাদাভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই প্রতিক্রিয়া জানায় তারা।
বিকাল তিনটায় সংবাদ সম্মেলন করে জবি শিবির অভিযোগ করে, একটি বিশেষ পক্ষের মন রক্ষা করতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৬ দিন পেছানো হয়েছে। এ সময় জবি শিবির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন পূর্বে ২৭ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়। তবে নির্বাচন কমিশনের সাথে মতবিনিময় সভায় একটি পক্ষ নির্বাচন পেছানোর জন্য জোরাজোরি করে। আগে ডাকসু, রাকসু ও চাকসু বানচালের জন্য এই গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করেছে।
তফশিলে শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে অভিযোগ করেছে জবি শাখা ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)। তারা তফসিল পুনর্বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।
ছাত্র অধিকার ও জাতীয় ছাত্রশক্তি যৌত সংবাদ সম্মেলন করে একই দাবি জানায়। ছাত্র অধিকার সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, শিক্ষার্থীদের মতামত, অংশগ্রহণ ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা না করে একতরফাভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে কমিশন ও প্রশাসন। এ সময় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
কমিশনের সাথে আলোচনা করে প্রতিক্রিয়া দিবে ছাত্রদল:
তফশিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি ছাত্রদল। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে কমিশন অযৌক্তিক আচরণ করেছে। আমরা কমিশনের সাথে আলোচনা করে প্রতিক্রিয়া জানাবো। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোন তারিখে ছাত্রদল নির্বাচন চাই জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রচার প্রচারনার জন্য পর্যাপ্ত সময় রেখে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলাম। সুনির্দিষ্টভাবে কোন নির্দিষ্ট তারিখ পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়ার দাবি করিনি।
এর আগে ২ নভেম্বর কমিশনের সাথে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানায় ছাত্রদল। তাৎক্ষণাত তার বিরোধীতা করে ঘোষিত ২৭ নভেম্বরেই নির্বাচনের দাবি জানায় ইসলামী ছাত্র শিবির।
