বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন,জুলাই সনদ সই হওয়ার মাধ্যমে ঐক্যমত কমিশনের ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ’ ।এরপরও যারা নিজেদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের গণতন্ত্রের পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ২ নম্বর গেইটস্থ বিপ্লব উদ্যানের পাশে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকতে পারে, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে৷ কিন্তু তারেক রহমান সাহেব নির্দেশ দিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে যাকে নমিনেশন দেওয়া হবে, তার পাশে সকল নেতাকর্মীকে সমস্ত শক্তি নিয়ে দাঁড়াতে হবে এবং বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। এই জায়গায় কোনো ধরনের প্রশ্ন তোলা যাবে না। এটা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ, ভবিষ্যৎ বিএনপির জন্য অনেক বড় পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে বিএনপিকে। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে আমাদের সকলকে, আপনাদের সকলকে।
নির্বাচন আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন শেষ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আজকের বিএনপিকে মনে রাখতে হবে, এখনো আন্দোলন শেষ হয়নি। আগামী তিন, চার, পাঁচ মাস পর্যন্ত, দেশে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন শেষ হবে না। গত ১৭ বছর আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে বিএনপির বিজয় ছিনিয়ে এনেছি, একইভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে বিএনপির বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় বাংলাদেশের মানুষ। সুতরাং উত্তর একটাই- ঐক্য ভাঙার কোনো সুযোগ নেই।
৭ নভেম্বরের চেতনায় গণতন্ত্রের শত্রু দের মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু বলেছেন, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ থেকে বাংলাদেশের শত্রু দের মোকাবেলা করেছে, গণতন্ত্রের শত্রু দের মোকাবেলা করেছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব বিপন্নকারীদের মোকাবেলা করেছে। আজকে আবার সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে, যারা নির্বাচন, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে, সবাইকে সাতই নভেম্বরের স্পিরিটে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে এদেশের মালিক এদেশের জনগণ।
তাদের মালিকানা নিশ্চিত হবে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে, একটি নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে, একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে। সুতরাং যারা এই নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের সাতই নভেম্বরের মতো পরাজিত করতে হবে।
জুলাই সনদ নিয়ে বিভক্তি তৈরি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন একটা ঐক্যমত কমিশন হয়েছিল। অর্থাৎ ঐক্য করার জন্য একটা কমিটি হয়েছিল। তাদের কাজ হচ্ছে সব দল মিলে একটা ঐক্যমত সৃষ্টি করা, আমরা বারবার বলেছি আপনাদের কাজ হচ্ছে সব দলের সঙ্গে বসে একটা ঐক্যমত সৃষ্টি করা। ঐক্যমত মানে এই নয় যে, সব দল সবকিছুতে একমত হবে। যেগুলোতে ঐক্যমত হবে, সেই ঐক্যমত নিয়েই আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবো। আর যেগুলোতে ঐক্যমত হবে না, সেগুলো নিয়ে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের সুযোগ আছে, আগামী নির্বাচনের আগে সেগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়া, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে পাশ করা। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। ঐক্যমতের বাইরে যাবার কোনো সুযোগ নেই।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক আর ইউ চৌধুরী শাহিন এবং ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, নির্বাহী কমিটির সদস্য শামসুল আলম, বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
