আসন্ন ক্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইতিহাসের বড় চমক দেখাবে জামায়াতে ইসলামী বলে মন্তব্য করেছেন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সালমান ফারসী।
রোববার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালমান ফারসীর পোস্টটি ঢাকাভয়েস২৪—এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো—
জামায়াত নিয়ে লাস্ট ১ বছরে অনেক সমালোচনা ও রাজনৈতিক অভিঙ্গতা নিয়ে লিখেছি মনোনীত প্রার্থী ও চিরায়ত রাজনৈতিক স্ট্রাটেজি সম্পর্কে।
কিন্তু জামায়াত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দলীয় কর্মকান্ড ও ওয়েলফেয়ার পলিটিক্সে যেভাবে এগিয়ে গিয়েছে রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে তা ধারনার চেয়েও বেশি।
গতানুগতিক রাজনৈতিক ধারার বাইরে গিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেভাবে দেশের মানুষের মন জয় করে নিয়েছে তা আগামী নির্বাচনে বড় একটা প্রভাব ফেলবে।
প্রভাব আসলে কতটুকু ফেলবে যদি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দেয়া হতো তাহলে খুব ভালোভাবে বোঝা যেত।
জামায়াতের এই অগ্রযাত্রাকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলেছে গত কয়েক মাসের ছাত্র সংসদে নির্বাচনের ফলাফল গুলো।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে আমি একদিন রাতে শহরে যাচ্ছিলাম।সিএনজি চালকদের সাথে কথা বলতে বলতে ছাত্রসংসদের কথা উঠলো।আমি বললাম মামা চবি ক্যাম্পাসে কারা জিতবো এবার?
মামা বললেন এই হানেও জামাত জিতবো।
আমার তখন মনে হলো এখনো দেশের রিকশাওয়ালা,দিনমজুর মানুষগুলো জামাত শিবির নামেই জামায়াতকে বোঝে।শিবিরের সাফল্যকে তাঁরা জামায়াতের ঘরেই চিন্তা করে।
দেশের খুব অল্প সংখ্যক মানুষ সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত।কিন্তু
রাজনৈতিক সচেতন নাগরিকের সংখ্যাটা প্রায় ৮০ শতাংশ এখনো।
বিগত কয়েক বছরে টিভিতে সংবাদ ও অন্যান্য বিনোদনের
চেয়ে অনলাইন মিডিয়া ও ইউটিউবেই আসক্ত দেশের বড় একটা জনসংখ্যার অংশ।
এই বড় অংশটা গত ১ বছরের প্রত্যেকেই জামায়াতের আমীরকে কমপক্ষে ইউটিউব বা ফেসবুকে ৫ থেকে ১০ বার দেখেছে।সাদা চুলের এই মানুষটার প্রতি নিজ দলের বাইরেও সুইংদের বড় একটা অংশের জনপ্রিয়তা আছে।
প্রত্যেকেই তাঁর বক্তব্য শুনে।
রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সিএনজিওয়ালা, গার্মেন্টস শ্রমিক যাদেরই জিজ্ঞেস করবেন আগামীতে কাকে ভোট দিবে প্রথমে বলতে না চাইলেও ননপলিটিক্যাল হলে একটু পর হয়তো দাড়িপাল্লা নয়তো ইসলামি দলের কথা বলবে।
শিবিরের ভালো কাজ ও প্রোগ্রামগুলো অনলাইনে ট্রেন্ডে থাকার কারনে শ্রমিক,পেশাজীবি সহ এলিটরাও শিবিরের জমকালো প্রোগ্রাম ও ওয়েলফেয়ার কাজগুলো দেখতে পায়।এতে করে গত এক বছরের অনেকের মাইন্ডে শিবিরের প্রতি বেশ পজেটিভনেস এসেছে।
জামায়াতের বর্তমান সমর্থন আসলে এখন কি পরিমাণে হয়েছে এবং তা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা কেউই বলতে পারি না।
তবে আপাতদৃষ্টিতে যে গুমট আবহাওয়া চলছে রাজনীতিতে তাতে মানুষ পরিবর্তনের দিকে যেতে চাচ্ছে এটা একেবারে বাস্তব।জামায়াতকে বিকল্প হিসেবে নিলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
সামনের নির্বাচনে জামায়াত তাঁদের ইতিহাসের সবথেকে বড় চমক নিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ। তৃণমূলে এত জনপ্রিয়তা দেখে সত্যিই অনেক অবাক হচ্ছি।
আপনারা বলতে পারেন জামায়াতের তো প্রার্থী অনেক দূর্বল দেশের অনেক আসনে।আমি তাঁদের বলি মানুষ যখন বিকল্পের ঘোরে বায়বীয় মদ খেয়ে ফেলে তখন ব্যক্তির চেয়ে সামষ্টিক দলকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।তাই মানুষ জামায়াতের প্রার্থীর চেয়ে জামায়াতকে মূল শক্তিকে দেখার আকাঙ্খায় দাঁড়িপাল্লাকে বেছেও নিতে পারে।
দেশে আগামী নির্বাচনে বিভিন্ন জেলায় আসনগুলোতে এমন এমন আসন জামায়াত জিতে যাবে যেখানে জামায়াত আগে কখনোই জিততে পারেনি।
দেশে যে জনসমর্থন জামায়াত তৈরী করে নিয়েছে আগামী নির্বাচনে ব্যালটের বিপ্লবও দাঁড়িপাল্লা মার্কা ঘটাতে পারে।
খুব অবিশ্বাস্য মনে হলে আমার লেখাটার স্ক্রিনশট নিতে পারেন।
জামায়াত পাওয়ারে যাওয়ার মতো করেই নিজেদের গোছাচ্ছে।
যদি পাওয়ারে যেতে নাই পারে তবে খুব শক্তিশালী এক বিরোধী দল হবে জামায়াত।
তবে নির্বাচন হতে হবে একেবারে স্বচ্ছ ও কেন্দ্র দখলবিহীন…
