সিরিয়ায় বড় পরিসরে হামলা শুরুর কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানান, ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্টের (আইএসআইএস) ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের সামরিক হামলা চালাচ্ছে। গত সপ্তাহে সিরিয়ার পালমিরা শহরে দুই মার্কিন সেনা ও এক দোভাষী নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় চালানো হচ্ছে এই আক্রমণ।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, ‘আইএসআইএলের অত্যন্ত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জবাবে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু হয়েছে। সিরিয়ার নতুন সরকারও এই অভিযানের পক্ষে আছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের শেষ দিকে গঠিত নতুন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানে সমর্থন দিয়েছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিবৃতি দিয়ে নিশ্চিত করেছে যে, দেশটি আইএসআইএলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অটল অবস্থানে রয়েছে এবং আইএসআইএল যাতে সিরিয়ার ভেতরে নিরাপদ আশ্রয় না পায় সে বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানান, হামলার নাম দেয়া হয়েছে “অপারেশন হকআই স্ট্রাইক” এবং এটি আইএসআইএল যোদ্ধা, তাদের অবকাঠামো ও অস্ত্রভাণ্ডারকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘এটি যুদ্ধ শুরুর ঘোষণা নয়—এটি প্রতিশোধের ঘোষণা। আজ আমরা আমাদের শত্রুদের খুঁজে বের করেছি, হত্যা করেছি এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।”
দুই মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, কেন্দ্রীয় সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে আইএসআইএলের ডজনখানেক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এদিকে আল জাজিরার ওয়াশিংটন প্রতিনিধি রোসিল্যান্ড জর্ডান জানিয়েছেন, ট্রাম্প ও হেগসেথের বার্তায় একটি বিশষ প্রতিয়মান হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের সেনা নিহত হওয়ার ঘটনার তুল্য জবাব দিতে চায়।
তিনি বলেন, সিরিয়ার নতুন সরকারও এই অভিযানে সম্মতি দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যদিও সিরিয়ার সরকারি বাহিনী এই হামলায় সরাসরি অংশ নিচ্ছে কি না তা স্পষ্ট নয়। জর্ডান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে সিরিয়াকে আসাদ শাসনের স্বৈরতান্ত্রিক অতীত থেকে বেরিয়ে আনতে আইএসআইএলের অবশিষ্ট হুমকি দূর করা প্রয়োজন। বর্তমানে প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা সিরিয়ায় অবস্থান করছে এবং দীর্ঘদিন ধরে সেখানে সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে আইএসআইএলের বিরুদ্ধে।
গত সপ্তাহে পালমিরা শহরে মার্কিন ও সিরীয় বাহিনীর কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালায় এক অস্ত্রধারী, যাতে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যসহ তিন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়। হামলাকারী নিহত হওয়ার আগে আরও তিন মার্কিন সেনাকে আহত করে।
সূত্র: আল জাজিরা
