বিপিএল শুরুর আগমুহূর্তে দল প্রত্যাহারের আবেদন এক ফ্র্যাঞ্চাইজির

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বেলা ৩টায় উদ্বোধনী দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট টাইটান্সের মুখোমুখি হবে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। আর সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে দ্বিতীয় ম্যাচে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম রয়্যালস।

অর্থাৎ বিপিএলের দ্বাদশ আসরের পর্দা উঠতে আর মাত্র একদিন বাকি। ঠিক এমন সময়েই বড় ধরনের ধাক্কা খেলো টুর্নামেন্টটি। আর্থিক সংকটের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে বিপিএল থেকে সরে দাঁড়ানোর আবেদন করেছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। আর তাতেই আসর শুরুর আগমুহূর্তে তাদের এমন সিদ্ধান্তে নতুন করে অনিশ্চয়তায় পড়েছে লিগটি।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম রয়্যালস ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক কাইয়ুম রশিদ বিসিবি বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছেন, আর্থিক জটিলতার কারণে তারা বিপিএলে অংশ নিতে আগ্রহী নন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবি পরিচালক ও বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু।

এ প্রসঙ্গে বিসিবির পরিচালক মিঠু বলেন, ‘আমরা সকালে চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সাথে আলোচনা করছি। এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং খেলোয়াড়দের বিষয়গুলো ম্যানেজ করতে হবে। চিঠিতে অনেক বিস্তারিত কথা বলা হয়েছে, তবে মূল কারণ হিসেবে তারা আর্থিক সমস্যার কথাই উল্লেখ করেছে।’

এর আগে বিসিবির পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম রয়্যালসের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তিকে বাদ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজিটির স্পন্সর সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আলোচনা চলছিল। এর মধ্যেই দল প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক আবেদন করলো চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজি।

গেল মৌসুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল চট্টগ্রাম। যদিও এবারের আসরের আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। তবুও ফি ও ব্যাংক গ্যারান্টিসহ বিসিবির সব পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পরে বিসিবি জানিয়েছে, আর্থিক শর্ত পূরণের বিষয়টি তারা নিশ্চিত করেছে।

এদিকে, টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম রয়্যালসের তিন বিদেশি ক্রিকেটার বিপিএল থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করেন। তারা হলেন- পাকিস্তানের লেগস্পিনার আবরার আহমেদ, আয়ারল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটার পল স্টার্লিং এবং শ্রীলঙ্কার উইকেটকিপার ব্যাটার নিরোশান ডিকভেলা।

জানা গেছে, নিজ নিজ দেশের ক্রিকেট বোর্ড থেকে ছাড়পত্র না পাওয়ায় স্টার্লিং ও ডিকভেলা বিপিএল থেকে সরে দাঁড়ান। অন্যদিকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আবরার আহমেদের এনওসি স্থগিত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির ভেতরের অস্থিরতা এখানেই শেষ নয়। শুরুতে তারা প্রধান কোচ হিসেবে দেশীয় টেকনিশিয়ান মমিনুল হকের নাম ঘোষণা করলেও পরে সিদ্ধান্ত বদলে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ জাস্টিন মাইলস ক্যাম্পকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানায়। তবে বিপিএল শুরুর দুই দিন আগেও কোচ ক্যাম্পের বাংলাদেশে আগমন নিয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য দিতে পারেনি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।

উল্লেখ্য, বিপিএলের দ্বাদশ আসরের সুষ্ঠু ও পরিচ্ছন্নভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রত্যাশা থাকলেও, শুরু হওয়ার আগেই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লো আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বিসিবি। বন্দর নগরীর দলটির বিষয়ে ক্রিকেট বোর্ড এখন কি সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *