বড়দিনের ধর্মোপদেশে গাজাবাসীর দুরাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ পোপ লিওর

বড়দিনে বৃহস্পতিবার দেওয়া ধর্মোপদেশে গাজায় ফিলিস্তিনিদের দুরাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পোপ লিও—যা সাধারণত যিশুখ্রিস্টের জন্ম উদযাপনের এই আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে খুব কমই এত সরাসরি রাজনৈতিক আহ্বান হিসেবে শোনা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পোপ লিও বলেন, গোয়ালঘরে যিশুর জন্মের গল্প আমাদের দেখায়—ঈশ্বর মানুষের মাঝে তার ‘ভঙ্গুর তাঁবু’ খাটিয়েছেন।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘তাহলে আমরা কীভাবে গাজার তাঁবুগুলোর কথা ভাবব না—যেগুলো সপ্তাহের পর সপ্তাহ বৃষ্টি, ঝড় ও শীতের মুখোমুখি?’

বিশ্বজুড়ে কার্ডিনালদের ভোটে মে মাসে নির্বাচিত হয়ে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি হওয়া লিও—যিনি তুলনামূলক শান্ত ও কূটনৈতিক ধাঁচের—সাধারণত ধর্মোপদেশে রাজনৈতিক বিষয় এড়িয়ে যান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি একাধিকবার গাজার ফিলিস্তিনিদের পরিস্থিতি নিয়ে আক্ষেপ করেছেন এবং গত মাসে সাংবাদিকদের বলেন, ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে অবশ্যই একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

দুই বছরের তীব্র অভিযান ও বোমাবর্ষণের পর ইসরায়েল ও হামাস অক্টোবরে যুদ্ধবিরতিতে গেলেও মানবিক সংস্থাগুলো বলছে—গাজায় এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশ করতে পারছে না, আর প্রায় সমগ্র জনগোষ্ঠীই গৃহহীন।

সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় বৃহস্পতিবার হাজারো উপাসকের উপস্থিতিতে দেওয়া ধর্মোপদেশে পোপ লিও বিশ্বজুড়ে গৃহহীন মানুষের দুর্দশা ও চলমান যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ নিয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘নিরস্ত্র জনতার জীবন ভঙ্গুর—অসংখ্য চলমান ও সদ্য সমাপ্ত যুদ্ধ তাদের পেছনে ধ্বংসস্তূপ ও অমোচনীয় ক্ষত রেখে গেছে। ভঙ্গুর তরুণদের মন ও জীবন—যাদের অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য করা হয়, যারা ফ্রন্টলাইনে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারে তাদের কাছে যে অর্থহীন কাজ চাওয়া হচ্ছে, আর যারা তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে তাদের আড়ম্বরপূর্ণ ভাষণের ভেতরের মিথ্যাগুলো।

তিনি পরে ঐতিহ্যবাহী ‘উরবি এৎ ওরবি’ (শহর ও বিশ্ববাসীর উদ্দেশে) বার্তা ও আশীর্বাদ দেবেন—যেখানে সাধারণত বৈশ্বিক সংঘাতগুলো নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *