হাদি হত্যার বিচার দাবিতে বিয়ের গেটে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ

বিয়ের আনন্দঘন আয়োজনেও উঠল হাদি হত্যার বিচারের দাবি। ব্যতিক্রমী এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে বিয়ের গেটেই হাদি হত্যার ন্যায়বিচার চেয়েছেন বরপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

জানা যায়, গ্লোবাল টেলিভিশনের রিপোর্টার জাকির হোসেনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাটেশ্বরী এলাকার নুসরাত জাহান নীলার বিয়ে সম্পন্ন হয়। নির্ধারিত সময়ে বরপক্ষ কনের বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।

প্রচলিত বিয়ের গেটের হট্টগোল, চিৎকার বা গেট ফি নিয়ে দরকষাকষির পরিবর্তে বরযাত্রীদের হাতে ছিল হাদি হত্যার বিচার দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড। প্ল্যাকার্ডগুলোয় লেখা ছিল—‘হাদি হত্যার বিচার চাই’ এবং ‘জাস্টিস ফর হাদি’।

বরযাত্রী কল্লোল রায় বলেন, হাদি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ছিল। তাকে হারিয়ে দেশ অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। এই হত্যার বিচার না হলে ভবিষ্যতে আর নতুন হাদি তৈরি হবে না—এই উপলব্ধি থেকেই বন্ধুর বিয়েতে আমরা এই দাবি তুলেছি।

কৃষক নেতা জুয়েল বলেন, বিয়ে মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোর একটি। সেই মুহূর্ত থেকেই অন্যায় ও অনিশ্চিত মৃত্যুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। একই সঙ্গে এটি নবদম্পতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুশৃঙ্খল ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।

এ বিষয়ে বর জাকির হোসেন বলেন, চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এক নতুন চেতনা তৈরি করেছে। সেই অভ্যুত্থানের অন্যতম অগ্রনায়ক শরীফ ওসমান হাদি ছিলেন বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর।

ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এখনো তার হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়নি। আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমি ন্যায়বিচারের দাবি জানাতে চেয়েছি—ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশে হাদি ভাইয়ের বিচার যেন জনগণ দেখতে পায়। বিয়ের মতো ব্যক্তিগত ও আনন্দঘন আয়োজনে এমন প্রতিবাদ স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *