যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৮ ডিগ্রি সে.

দ্বিতীয় দিনের মতো এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও গত কয়েক দিন ধরে কুয়াশা ও উত্তরের বাতাস শীতের অনুভূতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। শীতের তীব্রতায় শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং কোথাও কোথাও তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় ঠান্ডার অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে, প্রচণ্ড শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। মোটা জ্যাকেট ও মাফলারে ঢেকে মানুষজনকে জুবুথুবু হয়ে পথ চলতে দেখা যাচ্ছে। হাড়কাঁপানো শীতে অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তবে যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন, তাদের অনেকেই কাজ পাচ্ছেন না।

যশোর শহরের লালদীঘি পাড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪শ’ মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হন। প্রচণ্ড শীতে সেই সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এরপরও কাজ না পাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ কাজের আশায় অনেক বেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন।

বাহাদুরপুর এলাকার সুজন মিয়া বলেন, শীতে একদিন কাজ পাই তো তিনদিন পাই না। গত এক সপ্তাহ ধরে কাজ হচ্ছে না। শীতের মধ্যে প্রতিদিন ভোরবেলায় এসে বসে থেকেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার নির্মাণ শ্রমিক মো. মিনহাজ বলেন, শীতে বাইরে দাঁড়াতে পারছি না। অনেক কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু উপায় নেই। কাজের সন্ধানে বের হয়েছি। ঠিকমতো কাজও পাচ্ছি না।

শহরের শংকরপুর এলাকার শ্রমজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, বিল্ডিংয়ের রঙের কাজ করি। কাজের সন্ধানে এসেছি। এখানে বসে আছি, এখনো কাজ পাইনি। শীতের মধ্যে অনেক কষ্ট হচ্ছে। পেটের দায়ে ঘরের বাইরে বের হয়েছি। কাজ পাব কি না জানি না।

শহরের রায়পাড়া এলাকার রিকশাচালক হানেফ আলী বলেন, শীতে মানুষ ঘর থেকে খুব কম বের হচ্ছে। এজন্য যাত্রী পাচ্ছি না। আয়-রোজগারও কমে গেছে। খুব কষ্টে দিন পার করছি।

প্রসঙ্গত, আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *