রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ইসলামী ছাত্রশিবিরের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন ও নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটি বলছে, কোনো কোনো প্যানেল নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় নির্বাচন বানচালের নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনে তাদের উল্লাসই তার স্পষ্ট প্রমাণ।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য ছাত্রসমাজের বহুল আকাঙ্ক্ষিত রাকসু নির্বাচন এক অদৃশ্য ইশারায় বারবার ব্যাহত হচ্ছে।

বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি যখন শেষ পর্যায়ে, তখন পরিকল্পিতভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি বিশেষ দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতিমধ্যে তিন দফা তারিখ পরিবর্তনের পর চলতি মাসের ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন আয়োজনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন নিজেদের সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির অজুহাতে পুনরায় তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করেছে। আমরা মনে করি, এটি কোনো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়; বরং এই সিদ্ধান্ত মূলত নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ।
আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন অবিবেচনাপূর্ণ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই।’

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘প্রশাসন শুরু থেকেই ছাত্রদলকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে আসছে। ওই দল প্যানেল গঠন করতে না পারায় নির্বাচন ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পেছানো হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী ৩০ জুনের মধ্যে তফসিল ঘোষণার কথা থাকলেও তা হয়নি।

পরে ২৮ জুলাই তফসিল ঘোষণা করে ১৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়, যা পরবর্তী সময় ২৫ সেপ্টেম্বর এবং নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তারিখ পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করা হলো। প্রশাসন পরিবর্তিত তারিখ অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কি না, সে বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। কারণ ইতিমধ্যেই একটি দলের অনুগত শিক্ষকদের অসহযোগিতা ও প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কোনো কোনো প্যানেল নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় নির্বাচন বানচালের নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনে তাদের উল্লাসই তার স্পষ্ট প্রমাণ।

রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন প্রহসন কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিপুল সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় ছাড়াও অনেক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে গিয়ে নিয়মিত ক্লাস পর্যন্ত করতে পারেননি। কিন্তু এসব বিষয়কে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে প্রশাসন একটি দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রশাসনের এমন হঠকারী সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই থমকে যাবে না। রাকসু আদায়ের মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নিয়ে তারা সব ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে এবং ক্যাম্পাসকে দলীয় লেজুড়বৃত্তি থেকে মুক্ত করে একটি সত্যিকার অর্থে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তুলবে, ইনশাআল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *