বিক্ষোভে উত্তাল নেপাল : নিহত বেড়ে ১৯, কাঠমান্ডুতে কারফিউ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে সোমবার কাঠমান্ডু ও অন্যান্য শহরে জেন জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে পুলিশের গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট। রাজধানীর নিউ বানেশ্বর এলাকায় প্রথমে বিক্ষোভ শুরুর পর কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় বিকেল ৩ টা ৩০ থেকে কারফিউ জারি করলেও দিনভর বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করে।

হাসপাতাল কর্মকর্তারা জানিয়েছে, কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে – জাতীয় ট্রমা সেন্টারে আট জন, এভারেস্ট হাসপাতালে তিন জন, সিভিল হাসপাতালে তিন জন, কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে দুই জন ও ত্রিভুবন টিচিং হাসপাতালে এক জন মারা গেছে।

হাসপাতালে অনেক আহতকে ভর্তি করেছিলেন রঞ্জনা নেপাল।

তিনি সিভিল হাসপাতাল থেকে এএফপিকে বলেন, ‘হাসপাতালে এত অস্বস্তিকর পরিস্থিতি আমি আগে কখনও দেখিনি। হাসপাতালে কাঁদানে গ্যাসও প্রবেশ করেছিল, যার ফলে ডাক্তারদের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।’

দ্য হিমালয়ান এর প্রতিবেদনে বলা হয়, আহতদের সংখ্যা এখনও অজানা, কারণ রোগীর ভিড়ে নির্ধারণ করা কঠিন। সিভিল হসপিটাল ও ট্রমা সেন্টারসহ কিছু হাসপাতাল রোগী ধারণে সমস্যায় পড়ছে ও তাদের অন্য হাসপাতালগুলোতে পাঠানো শুরু করেছে।

প্রশাসন জানিয়েছে, মৃত ও অনেক আহত ব্যক্তির পরিচয় এখনো নিশ্চিত হয়নি। বিবিসি জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঠমাণ্ডুর বিভিন্ন স্থানে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।

বিক্ষোভকারীরা নিউ বানেশ্বরের ফেডারেল পার্লামেন্ট কমপ্লেক্সেও হামলা চালিয়েছে।

এ সময় সেখানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবরও পাওয়া গেছে। বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত ওই এলাকায় পরিস্থিতি অশান্ত রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে এবং নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ওপর বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়েছে নিরাপত্তা কর্মীরা।

সরকারের মুখপাত্র এবং যোগাযোগমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, “সরকার কিছু একটা করবে।

দেশটিতে ২৬ টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কাঠমান্ডুসহ অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ করছে জেনজিরা।

তরুণ প্রজন্মের এই বিক্ষোভকারীরা “জেন জি” হিসেবে পরিচিত।

সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর দীপক পাউডেল জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ওই হাসপাতালেই একশ জনেরও বেশি আহত ব্যক্তিকে আনা হয়েছিল। তাদের অনেকেই রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন। কাঠমান্ডু ভ্যালি পুলিশ অফিসের মুখপাত্র শেখর খানাল বলেছেন,” কতজন আহত হয়েছেন তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিক্ষোভকারী উভয় পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *