রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) একমাত্র ছাত্রী হল, শহীদ ফেলানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা সীমাহীন দুর্ভোগ ও বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ তুলেছেন। আবাসন সংকট, খাবারের নিম্নমান, প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাব এবং কঠোর নিয়মের কারণে হলের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে বলে জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের আট শয্যার কক্ষে প্রতিটি বিছানায় দুজন করে শিক্ষার্থীকে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা চার শয্যার কক্ষের ভাড়ার সমান। একটি ছোট বিছানা, টেবিল ও চেয়ার ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হওয়ায় পড়াশোনার পরিবেশ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে।
আবাসিক শিক্ষার্থী আতিকা ঊর্মি বলেন, “ডাইনিংয়ের খাবারের মান এতটাই খারাপ যে মুখে তোলা যায় না। অথচ পর্যাপ্ত থালা-বাসনও নেই। পরীক্ষার সময় পড়ার জন্য একটি রিডিং রুম পর্যন্ত নেই আমাদের।” তিনি আরও যোগ করেন, রাত সাড়ে আটটায় হলের গেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী, যারা টিউশনি করে বা অন্য প্রয়োজনে বাইরে থাকে, তাদের হলে ফিরতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
আরেক শিক্ষার্থী মনিসা আক্তারের কণ্ঠেও একই সুর। তিনি বলেন, “হলে কোনো গেস্টরুম না থাকায় পরিবারের কেউ দেখা করতে এলে বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে হয়, যা খুবই অস্বস্তিকর। বারবার অভিযোগ জানিয়েও নষ্ট ফ্যান বা লাইট মেরামত করা হয় না।” এছাড়া, হলের ভেতরের দোকানে জিনিসপত্রের দাম বাইরের চেয়ে বেশি এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অনুপস্থিতির কারণে হলের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট সিফাত রুমানা বলেন, “হল তার নীতিমালা অনুসারেই পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের প্রথমে ডাবল সিটে থাকতে হয়, পরে আসন ফাঁকা হলে সিঙ্গেল সিট দেওয়া হয়; এটি পুরোনো নিয়ম। গেট বন্ধের সময়সূচিও হল নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত।”
গেস্টরুমের বিষয়ে তিনি জানান, নিচতলায় হল অফিসের পাশে একটি গেস্টরুম নির্মাণের কাজ চলছে। তবে শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দুর্ভোগ নিরসনে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগের আশ্বাস তার বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
