এবার মহিলা জামায়াতের কোরআন তালিমে বিএনপির বাধা,আহত ১০

ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের কুরআন তালিমের প্রোগ্রামে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০জন আহত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।

গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আল আমিন মার্কেট সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২ নম্বর ওয়ার্ড শিবপুর বেপারি বাড়িতে বাদ আসর মহিলা জামায়াতের কোরআন তালিমে অংশ নেন কয়েকজন নারী। সদর উপজেলা যুবদল সদস্য কামরুল ইসলাম সেখানে বাধা দেয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপি-জামায়াতের স্থানীয় নেতারা আল আমিন মার্কেট নামক স্থানে ঘটনার সমাধানে আলোচনায় বসেন। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে উভয়পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।

সদর উপজেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ টিপু বলেন, মহিলা জামায়াতের কুরআন তালিমে বাধার খবর পেয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ছুটে আসে। এসময় বিএনপি ও যুবদল নেতাকর্মীদের হামলায় ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি সোহরাব হাসান, ছাত্রশিবিরের ইউনিয়ন সভাপতি আরমান হোসেন, সেক্রেটারি মেহেদী হাসান, প্রকাশনা সম্পাদক সারাফাতুল্লাহ, ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি জিয়াউর রহমান, ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রশিবির সভাপতি নাজমুল হাসান, নোমান, মেজবাহ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এদের মধ্যে নাজমুলসহ কয়েকজনকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

টিপু আরো বলেন, রাতে আহতদের হাসপাতালে দেখতে যান জামায়াতের জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নান। তিনি হামলার ঘটনার নিন্দা ও হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি সোহরাব হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘আসরের পর বাজারের পার্শ্ববর্তী বাড়িতে মহিলাদের একটা তালিমের প্রোগ্রাম চলছিল। এ অবস্থায় যাদের ঘরে প্রোগ্রাম চলছিল তিনি বাজারে আসছিলেন। যুবদল নেতা কামরুল ওই নারীকে উদ্দেশ করে কটূক্তি করে লোকজন জড়ো করে। এ পরিস্থিতিতে আমরা মাগরিবের নামাজের আগে জড়ো হই। সেখানে কথাকাটাকাটির মধ্যে তারা হামলা করে।’

ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক বলেছেন, ‘আমি মাগরিবের নামাজ পড়ে জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছিলাম, এসময় জামায়াতের আমির আমাকে কল দেয়। উনি বললো যে একরাম ভাই এখানে ঝামেলা হইছে আপনি একটু আসেন। গিয়ে দেখি উভয় পক্ষের লোকজন। ঘটনার সূত্রপাত হলো, জামায়াতের মহিলারা তালিমের নামে ভোট চাইতেছিল। তো ওখানের স্থানীয় এক ছেলে আমাদের, সে যুবদল করে, সে বলতেছে তোর ঘরে তালিম হচ্ছে নাকি ভোট চাচ্ছে, জান্নাতের টিকেট দিবে বলতেছে তোরা শুনতেছিস না। এগুলা নিয়েই। যে যুবদলের কর্মী সে বলছে এগুলা ঠিক না। তালিম হলে তালিমের কথা বলবে, ভোট হলে ভোটের কথা। কিন্তু ভোট চাইতে গিয়ে জান্নাত বা তালিমের নাম বলবে কেন। এরা যে ভোট চাইতে গেছে জামায়াতের এরা মসজিদের আশপাশে তারা লোক জমায়। এর মধ্যে বিএনপির এরাও চলে আসে। সেই সময় দোকানে হামলা করে। হাতাহাতি হয়। পরে আমি গিয়ে সমাধান করি।’

জেলা যুবদলের সদস্য সজীবুল ইসলাম পাটোয়ারি জানান, খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাদের সাথে মীমাংসা করতে কথা বলছিলেন। এসময় শিবির কর্মীরা তাকে লক্ষ্য করে পেছন থেকে ইট ছুঁড়লে তিনিসহ বিএনপির আরো কয়েকজন আহত হন বলে দাবি করেন সজীব।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বোগদাদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘মারামারির খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দিই। উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন জন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তারা দাবি করছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *