অবশেষে নীলফামারীর মাটিতেই হতে যাচ্ছে স্বপ্নের চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল

এক হাজার শয্যার চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল নির্মাণ চূড়ান্ত দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নীলফামারীর মাটিতেই নির্মিত হতে যাচ্ছে স্বপ্নের এক হাজার শয্যার আধুনিক চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল। এটি কেবল একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং পুরো উত্তরাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনীতির জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা করতে চলেছে। সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী টেক্সটাইল মাঠের সাড়ে ২৫ একর জমিতে স্থাপিত হবে চীন সরকারের উপহার হিসেবে আসা এই বৃহৎ চিকিৎসালয়।

প্রকল্পটি নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন থাকলেও, সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছে। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর সই করা ‘অতীব জরুরি’ নোটিশটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। নোটিশে হাসপাতাল নির্মাণের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, বিভিন্ন স্থাপনার ব্যয় নির্ধারণ এবং অন্যান্য প্রাথমিক কাজ দ্রুত শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি নীলফামারীতে স্থাপনের সিদ্ধান্তে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক স্বস্তি ও উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

নীলফামারী-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এএইচএম সাইফুল্লাহ রুবেল এবং জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ মনে করেন, এই হাসপাতাল বিশেষায়িত চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করবে এবং স্বাস্থ্যখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।

নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ টেক্সটাইল মাঠকে হাসপাতালের জন্য সবচেয়ে উপযোগী স্থান হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, এটি পুরো জেলার বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নতুন গতি আনবে।

ইতিমধ্যে প্রকল্পের দৃশ্যমান অগ্রগতি শুরু হয়েছে। নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাকিউজ্জামান জানান, চিঠি পাওয়ার পর তাঁরা ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছেন এবং প্রাথমিক প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন, টেক্সটাইল এলাকায় ৬০ একরেরও বেশি সরকারি জমি থেকে হাসপাতালের জন্য ২৫ একর জমি বরাদ্দ দিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ব্যয় অনুমান ও নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে এবং শিগগিরই প্রকল্পের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *