আরও ভয়াবহ সংকটে গাজা,ত্রান প্রবেশে বাধা ইসরাইলের

আরও প্রকট আকার ধারণ করছে গাজার পরিবেশ। শীতকালীন ঝড় গাজায় বাস্তুচ্যুত লাখো ফিলিস্তিনির দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, ইসরায়েলি বিধিনিষেধের কারণে জরুরি আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা এখনো গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, তাদের কাছে তাঁবু, কম্বলসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রস্তুত থাকলেও সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে প্রবেশে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বাধা দিচ্ছে বা কঠোরভাবে সীমিত করছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ বয়সী এক ফিলিস্তিনি শিশুর তীব্র ঠান্ডায় মৃত্যু হয়েছে। এতে অপর্যাপ্ত আশ্রয়ে থাকা শিশু ও বয়স্কদের ঝুঁকি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ঝড়ে গাজাজুড়ে বহু আশ্রয়কেন্দ্র ও ব্যক্তিগত সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। প্রায় ৩০ হাজার শিশু এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কার্যক্রম দ্রুত পুনরায় শুরু করতে জরুরি মেরামত প্রয়োজন।

গাজার ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা উপত্যকায় আমরা এখন যে পরিস্থিতির মুখোমুখি, তা এক সত্যিকারের মানবিক বিপর্যয়।

এই সংকটের মধ্যেই কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে গাজায় ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল করা, ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করা এবং যুদ্ধ অবসানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে অগ্রগতির বিষয়টি উঠে আসে।

আলজাজিরার সাংবাদিক অ্যালান ফিশার জানান, কাতারের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন—গাজায় মানবিক সহায়তা ‘নিঃশর্তভাবে’ প্রবেশ করতে দিতে হবে। তিনি যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনাও আলোচনা করেন এবং বলেন, এ বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।

যুদ্ধবিরতি থাকা সত্ত্বেও গাজায় সহিংসতা থামেনি। চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটির কেন্দ্রীয় এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, একটি মর্টার শেল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বে গোলাবর্ষণের খবরও পাওয়া গেছে। পূর্ব গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি গুলিতে আরও দুজন আহত হন। এ ছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতা বৃদ্ধির মধ্যে ক্বালকিলিয়ায় ইসরায়েলি সেনারা এক যুবককে গুলি করে আহত করেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭০ হাজার ৬৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময়ে এক লাখ ৭১ হাজার ১৫২ জন আহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। একই সময়ে হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *